২০ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:৪৪ পি এম
তাফাজ্জল হোসাইন খান ১৯৫৫ সালে গাজীপুর জেলার কাঁপাসিয়া থানার উত্তরখাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম রফিকুল ইসলাম খান এবং মা- মরহুমা রমিজা খানম। তার পিতা খেলাধুলা, গান ও নাটকে ছিলেন সমান পারদর্শী। বলা যায়- পিতার সংগীত প্রতিভার পুরোটা পান তিনি। গ্রামের হাইস্কুল থেকে এস এস সি পাশ করার পর ঢাকার কবি নজরুল কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও বি.এড সম্পন্ন করেন। বি. এড পড়া অবস্থায় চাকুরি নেন জনতা ব্যাংকে। তারপর জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে (নৈশ শাখায়) মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ডিগ্রীতে পড়াকালীন সময়ে পরিচয় হয় কবি মতিউর রহমান মল্লিকের সাথে। শুরু হয় ইসলামী সংগীত চর্চা। সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্যও তিনি। তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত জনতা ব্যাংকে এবং ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি ব্যাংকটিতে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। একাধারে তিনি একজন গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। বর্তমানে তিনি সংগীতবিষয়ক জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ সংগীত কেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সংগীত জগতের খ্যাতিমান এই গুণীশিল্পীর এক বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সম্পাদক মোস্তফা মনোয়ার ও সাহিত্য সম্পাদক ইয়াসিন মাহমুদ। একান্ত এ সাক্ষাৎকারের আলাপচারিতায় সংগীতবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় আশয় উঠে আসে তা পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : ওয়া- আলাইকুম সালাম। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
আপনি তো বাংলাদেশ সংগীত কেন্দ্রের সভাপতি। কেন্দ্রের কার্যক্রম সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : ‘বাংলাদেশ সংগীত কেন্দ্র’ একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যা মূলত: সংগীত নিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি সুদূর প্রসারী চিন্তা-ভাবনার আলোকে এর আত্মপ্রকাশ। শুরুতেই কিছু কাজের সিদ্ধান্তে হয়েছিল যা হবে গুণগত বিচারে গ্রহণযোগ্য। সস্তা জনপ্রিয়তার বদলে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তারকারী। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আমরা খুব কম সংখ্যক গান নির্মাণ করতে পেরেছি যার মূল্যায়ন দর্শক শ্রোতাগণই করবেন। তবে ৩/৪ বছরের পথচলায় উল্লেখযোগ্য বড় কোন অর্জন আমাদের নেই। নতুন বছরে নতুন উদ্যোমে নতুন অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই, সবার দোয়া, সহযোগিতা ও সর্বোপরি আল্লাহ ত’আলার সাহায্য ও তাওফিক কামনা করছি।
সংগীত জগতে আপনার পদচারণা কিভাবে? এবং সংগীতাঙ্গনকে আপনি কেনো বেছে নিলেন? সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর সাথে কিভাবে জড়িয়ে পড়েন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : আমি পারিবারিক ঐতিহ্য থেকেই সংগীতের অনুরক্ত-ভক্ত। সংগীতকে বেছে নিয়েছি এমনটা নয়, আমি দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ব্যাংকে কাজ করেছি, পাশাপাশি নিজের ভালোলাগা এবং পরবর্তীতে এদেশের জাতীয় সাংস্কৃতিক গতিপ্রবাহ আমাকে অনেকটা বাধ্য করেছে এ অঙ্গনের জন্য আমার সীমিত মেধা ও মননকে নিয়োজিত করতে, বলতে পারেন এ হচ্ছে অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিশ্বাসী সংস্কৃতির এক প্রাণান্তকর লড়াই। এটিকে আমি নিছক কোন ভালোলাগা-না লাগার মতো ব্যাপার মনে করি না। আমার উপর দায়িত্ব ও জবাবদিহিতার পর্যায়ে বিবেচনা করি। সাইমুমের সাথে মূলত: জড়িয়েছি আমাদের সবার প্রিয় মানুষ মরহুম মতিউর রহমান মল্লিকের মাধ্যমে। তিনিই আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছেন গান লিখতে ও সুর করতে।
আপনিতো গানের কারিগর। নিজে লিখেন, সুর করেন এবং কণ্ঠও দেন। কোন গান লেখা, সুর, কণ্ঠে যখন পূর্ণতা পায় তখন আপনার কেমন অনুভূতি তৈরি হয়?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এই অনুভূতি অবশ্যই ভালোলাগার। সবাই তার সৃষ্টির জন্য এবং তার পূর্ণতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। আমিও তাই করি।
ইসলামী গানের সুর কেমন হওয়া উচিত? কোন কোন সুর আপনাকে বেশী প্রভাবিত করে?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : ইসলামী গানের জন্য ভিন্ন কোন সুরের ব্যবস্থা বা প্রয়োজন পড়ে না, প্রচলিত যে সুরগুলি রয়েছে সে ধরনেরই হবে শুধু তার বাণীতে থাকবে না, অশ্লীলতা, বেহায়পনা ও অপ্রয়োজনীয় অর্থহীন উপাদান। আমাদের দেশ হাজার নদীর দেশ। এখানে বিল, ঝিল, হাওড়, পাশাপাশি রয়েছে বিস্তৃত পাহাড়ী অঞ্চল। এখানে আবহমান কাল থেকে মানুষের মুখে মুখে ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, জারী, সারী, লালন হাছনের গান। যে লোকগীতি, পল্লীগীতি, মানুষকে ভেতর থেকে আলোড়িত করে। যদি আমরা সফল একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব সংঘটিত করতে চাই। তাহলে আমাদেরকে আধুনিকের পাশাপাশি এই ধারাটিকেও সফলভাবে ধারণ করতে হবে।
নজরুল, ফররুখ, আব্দুল আলীমদের গানে যেভাবে মাটি-মানুষ, দেশ ও দশের কথা উঠে এসেছে। এখনকার গানে ততটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কারণটা কী?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এখনকার গানে তেমনটি হয় না, একদমই হয় না তা বলা যাবে না। তবে এটি সত্য নজরুল, ফররুখ এর মতো কবি, আব্বাস উদ্দীন ও আব্দুল আলীমের ন্যায় লিজেন্ড শিল্পী ঘরে ঘরে হয় না, সময়ের পথ পরিক্রমায় দীর্ঘ বিরতির পর আসে আবারও আসবে না তা কিন্তু বলা যাবে না। যেমন- কবি মতিউর রহমান মল্লিককে পেয়েছিলাম যিনি বিশ্বাসীদের জন্য রেখে গেলেন নির্ভেজাল হালাল এক সাংস্কৃতিক ভাণ্ডার।
আগের দিনের জনপ্রিয় গানগুলো এখন আর তেমনটা গাওয়া হয় না। আসলে এর প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে নাকি অন্য কোনো সমস্যা আছে? আপনি কি মনে করেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এটি গভীর এক চক্রান্তের অংশ বলেই আমার কাছে মনে হয়। নজরুলের গান যেগুলো গাওয়া হয় তার সবই প্রেমের কিন্তু তার যে ইসলামী গানের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। বছরে কয়টি গান আমরা শুনতে পাই? এর কারণ কি? কারণ একটিই তা হচ্ছে আমাদের পরিচয় আমাদের বিশ্বাস, ঈমান আকিদা থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে আধিপত্যবাদী ও ব্রাহ্মণ্যবাদী দর্শনের বিস্তার ঘটানো হচ্ছে, যাতে আমরা চিরদিনের জন্য স্বাধীনতার চেতনা হারিয়ে বশংবদ গোলামীর জিঞ্জিরে বন্দী হয়ে যাই।
বর্তমানে শিল্পীদের ভেতরে ভাইরাল প্রবণতা বেশ লক্ষণীয়। আপনি এ বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : ভাইরাল একটি মুখরোচক পরিভাষা। এটিকে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি বলেই বিশ্বাস করি। তবে যারা একটি ঐশী গ্রন্থের উপর আস্থা রাখে তাদের সকল কাজকর্মই সেই আদর্শের ছকে বাধা পড়ে। ফলে এই ধরনের বিভিন্ন প্রদর্শনের রোগ বালাই তাদেরকে পায় না। যাদের মধ্যে এমনটি দেখা যাবে তাদের অবশ্যই এটির আদর্শিক চিকিৎসা দরকার।
আপনি সংগীতাঙ্গনে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। এ অঙ্গনে আপনার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা যদি বলতেন-
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এটি কোন স্মরণীয় ঘটনা নয় তবে সাংস্কৃতিক ময়দানের কর্মীরা ঘটনাটি জানলে নিজেদেরকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারবেন। আমি পেশাগত জীবনে একজন ব্যাংকার ছিলাম, দায়িত্বের কিংবা পদমর্যাদার দিক থেকে
খুব ছোট ছিলাম না কিন্তু পেশাগত জীবনের বাইরে অর্থাৎ অবসরে যাবার পর বুঝলাম আমার সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মূল্য পেশাগত পরিচয় থেকে অনেক বেশী। যখন কোন অনুষ্ঠানে আমি হাজির থাকি যদি সে অনুষ্ঠানে আমার পেশাগত জীবনের কোন কলিগ যিনি হয় তো পেশাগত বিবেচনায় আমার তুলনায় অনেক উপরে ছিলেন কিন্তু লোকজন আমাকে যেভাবে ঘিরে ধরে অথচ আমার কলিগ তখন হয়তো অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে থাকেন। এটি এ জন্য উল্লেখ করলাম, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীদেরকে মানুষ কতটা ভালোবাসে, কতটা মূল্য দেয়। এটি বুঝার জন্য তাই আমাদের কথা বার্তায় আদান প্রদান কিংবা চারিত্রিক আচরণে খুবই সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এ বিশ্বাস ও ভালোবাসা যেন নিজেরা নষ্ট না করি।
ইসলামী সংগীতকে গণমানুষের কাছে ব্যাপকভাবে পৌঁছে দিতে কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী বলে মনে করেন? এর প্রচার- প্রসারে প্রযুক্তিকে কিভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : প্রযুক্তি ব্যবহারের তো কোন বিকল্প নেই। আজ সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের পরিবেশনাগুলি দ্রæততম সময়ের মধ্যে সারা দেশে এমনকি সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। এটিকে আরও বেগবান করতে হবে এবং এর প্রতিটি মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে। যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি।
একটি সমাজ বিপ্লবে সংগীতের প্রভাব কতটুকু? ইসলামী সংগীত চর্চা ও প্রসারে কোন ধরনের সংকট উপলব্ধি করছেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : সমাজ বিপ্লবের জন্য রাজনৈতিক বিপ্লবের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের বিকল্প নেই। সাংস্কৃতিক আন্দোলন দুর্বল হলে রাজনৈতিক বিজয় ধরে রাখা দুঃসাধ্য হয়ে উঠে।
সংগীতাঙ্গনে ইসলামী সংগীতের অবস্থান ও আমাদের করণীয় বিষয়ে যদি কিছু বলতেন।
তাফাজ্জল হোসাইন খান : সংগীতাঙ্গনে এখন ইসলামী সংগীতের অবস্থান একেবারেই শিশু পর্যায়ের। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় ইসলামী সংগীত দেশে ক্রমবিকাশমান হচ্ছে। এই ধারাটি ইতিমধ্যেই দ্রুত বিস্তার লাভ করছে যা এক নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। তা হলো ইসলামের পুনর্জাগরণের সম্ভাবনাময় হাতছানি। কাজেই সকল দলমত নির্বিশেষে এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে অপসংস্কৃতিকে মোকাবেলার শপথ নিতে হবে।
আপনার রচিত ‘তুমি রহমান তুমি মেহেরবান’ গানটি লেখার প্রেক্ষাপট জানতে চাই।
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এটির তেমন কোন নাটকীয় প্রেক্ষাপট নেই। তবে একটি বৈশিষ্ট্য হলো এটিই আমার রচিত প্রথম হামদ যা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
আপনার একটি বিখ্যাত নাতে রাসূল ‘হে রাসূল বুঝি না আমি’। এই গানটি কখন লিখেন? গানটি লেখার পরে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিলো?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : সময়ের ব্যাপাটি দিনক্ষণ গণনা করে বলতে পারবো না তবে এই নাতে রাসূলটিও তেমনি যা অনেকের ভালোবাসা ভালোলাগা অর্জন করেছিল এবং পাকিস্তানের বিখ্যাত পপ সুপার স্টার পরবর্তীতে ইসলামী সংগীত শিল্পী মরহুম জুনায়েদ জামশেদ ঊর্দু ও বাংলায় এই নাতে রাসূলটি গেয়েছিলেন।
আপনার রচিত গানের সংখ্যা কত হতে পারে? এখন কি নিয়মিত লিখছেন? কোন ধরনের গান এখন বেশি লিখছেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : গানের সংখ্যা হবে হয়তো প্রায় ১৫০-২০০ এর মত। এখন অবসর জীবনে আগের চেয়ে বেশি লেখা হচ্ছে। আমার গানের বিষয়বস্তু একটিই ‘ইসলাম’ এবং ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা নিয়ে অর্থাৎ মানুষকে আখেরাতমুখী করে আমল আখলাকে পরিবর্তন সাধন।
আপনিতো কোন গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করেন না। কিন্তু দেশে-বিদেশে এখন ইসলামী গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, এই বিষয়টা আপনি কিভাবে দেখছেন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাই না। কারণ এ ব্যাপারে ইসলামী স্কলারগণ এখনও গবেষণা করে যাচ্ছেন। তবে এতটুকু বুঝি আমাদের এই উপমহাদেশে সঙ্গীতে মিউজিক ব্যবহার বেশ দুরূহ। তাই এসবে সময় অপচয় না করে মিউজিকবিহীন যে ধারা মতিউর রহমান মল্লিক চালু করেছেন তাতেই অবিচল রয়েছি।
বাংলাদেশে ইসলামী গানের জাগরণটা কিভাবে শুরু হয়? ইসলামী গানের ভবিষৎ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন?
তাফাজ্জল হোসাইন খান : অনেক বড় প্রশ্ন তবে ছোট করে বলি- এদেশে মোটা দাগে ইসলামী গানের জাগরণ মূলতঃ জাতীয় কবি নজরুলের মাধ্যমে যা শিল্পী আব্বাস উদ্দীন সারা বাংলায় ছড়িয়ে দিলেন। তারপর কেটে গেছে অনেক দিন- আশির দশক থেকে কবি মল্লিকের মাধ্যমে আজকের এই ধারা শুরু হয়েছে যা অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী সংগীতের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। একসময় কওমী ঘরানার আলেমগণ রাজনীতিসহ ইসলামী সংগীতকে না জায়েজ ভাবতেন। আজ তারাও ইসলামী রাজনীতি ও সংগীতে ঈর্ষণীয় অবদান রাখছেন, তাই ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়। ইসলামী তথা সুস্থ ধারার নিকট অচিরেই অপসংস্কৃতির অশ্লীলতা পরাজিত হবে ইনশাল্লাহ
সংগীত কর্মীদের উদেশ্যে কিছু বলুন।
তাফাজ্জল হোসাইন খান : আমরা যারা ইসলামী সংস্কৃতি তথা সংগীতের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি তাদেরকে একটি কথা সামনে রাখতে হবে যে আমরা প্রথমত: আল্লাহর দ্বীনের কর্মী। তারপর সংস্কৃতি বা সংগীতের কর্মী। যেমনটি মতিউর রহমান মল্লিক বলে গেছেন “শিল্পী থেকে কর্মী বড় সুর ছড়িয়ে যাই”। তারপর কথা হচ্ছে, আল্লাহ আমাদেরকে যে সামান্য যোগ্যতা দিয়েছেন তার যথাযথ ও সঠিক প্রয়োগের জন্য আন্তরিক থাকা। কোন প্রকার গর্ব-অহংকার যেন আমাদেরকে গ্রাস করতে না পারে। যে যোগ্যতার জন্য আমরা সারা দেশে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হই তার জন্য আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতার অনুভূতিতে নীরবে অশ্রুসিক্ত হবার অভ্যাস গড়ে তোলা। তাহলেই শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচার আশা করা যেতে পারে। আমাদেরকে সারা দুনিয়ার নব নব সংগীতের ধারা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে এবং তা থেকে ইসলামী ধারাকে সমৃদ্ধ করার মত উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী হতে হবে যাতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা যায়। সাংগঠনিক কাঠামোর প্রতি অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হলে সমগ্র কাঠামোই দুর্বল হবে। শুধু নিজের সুনাম সুখ্যাতির চিন্তা যারা করবে তাদের জন্য দুনিয়ায় হয় তো এটা পাওয়া যাবে কিন্তু পরবর্তীটা যে অন্ধকার হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আসুন ইসলামী সংস্কৃতি জন্য এমনভাবে কাজ করি যাতে এই দুনিয়া ও তার পরবর্তী জীবনও নিশ্চিত সফলতা আনে তার জন্য প্রস্তুত হই।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
তাফাজ্জল হোসাইন খান : আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।