মানবতা ও সাম্যের কবি, বহুমাত্রিক প্রতিভার কবি, ইসলামী চেতনার কবি, বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান পুরুষ, বাংলাদেশের জাতীয় কবি ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি (সিসিএ)। শনিবার (২৫ মে) রাত নয়টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান- কবিতা, ও আমন্ত্রিত নজরুল গবেষকবৃন্দের জ্ঞানগর্ব আলোচনা।
শিল্পী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি জনাব সেলিম জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব বিশিষ্ট কবি ও গবেষক অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আখন্দ, প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক জনাব ইবনে ওয়াজেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আখন্দ বলেন, কবি নজরুল হচ্ছে আমাদের বিশ্বাস ও ইসলামি চেতনার কবি, তিনি সর্বদা ইসলামি চেতনা ও আদর্শকেই মানবতার মুক্তির হাতিয়ার মনে করতেন, তাইতো কবি লিখেছেন 'ধর্মের পথে শহিদ যাহারা আমরা সেই সে জাতী..। নজরুল ছিলেন দ্রোহের কবি, সেই দ্রোহ ছিল ন্যায়ের পক্ষে অন্যায় ও জুলুমের বিরোদ্ধ। নজরুলের কবিতা গানে ছিল সাম্যের আহ্বান। প্রধান অতিথি আরো বলেন, কবি নজরুলকে বলা যায় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম যুগস্রষ্টা কবি, সাহিত্যের আকাশে নজরুল ছিলেন একজন সূর্য সমতুল্য এবং বিশ্ব সাহিত্যের এক অমুল্য সম্পদ। কবিতা, গান, ছড়া, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক সকল ক্ষেত্রেই তার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলা সংগীতের ক্ষেত্রে তার বৈচিত্রময় সৃষ্টি সম্ভার তাকে চির অমর করে রেখেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের মূল্যায়নে নজরুলের কিছুই যায় আসেনা, নজরুল তৎকালীন সময়ে যেমন প্রাসঙ্গিক ছিলেন বর্তমান সময়েও প্রাসঙ্গিক, নজরুল তখন যেমন বলছিলেন তোমরা ভয় দেখিয়ে করছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়। আজকের সময়েও তার এই কবিতা বাস্তব ও প্রাসঙ্গিক। একদিকে প্রেম অন্যদিকে বিপ্লবী, আবার তৌহিদবাদিদের কাতারে দাড়িয়ে নজরুল বলছেন" মসজিদের ঐ পাশে আমায় কবর দিও ভাই..। এক কথায় কবি নজরুল ইসলাম এক বহুমাত্রিক কবি হিসাবে আমাদের গর্ব।
বিশেষ অতিথি ইবনে ওয়াজেদ তার আলোচনায় বলেন, আমরা বলবনা নজরুল কোন ইসলামি স্কলার তবে মুসলিম জাতিকে জাগিয়ে তোলার জন্য ও ইসলামি চেতনাকে শানিত করার যে চেষ্টা তিনি করে গেছেন আমাদের নিকট তার অবদান অনস্বীকার্য। বক্তারা বলেন, নজরুলকে নিয়ে যত গবেষণা করা যাবে ততই নিজেকে শানিত করা যাবে, ততই বাংলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধ হবে, এছাড়া বর্তমান সময়ে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের নিকট নজরুলকে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে নজরুলকে নিয়ে আরো অধিক গবেষনার কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন, শিল্পী শাহিদুল করিম খান,শিল্পী নুরুল ইসলাম, শিল্পী মাবরুর হোসাইন, শিল্পী আব্দুল্লাহ আল আকরাম হাদি, শিল্পী আব্দুল্লাহ ইকবাল ও চট্টলা গানের দল। কবিতা আবৃত্তি করেন, আবৃত্তিকার আদনান করিম ও আরশাদ মাহমুদ। পবিত্র কুরআন তেলোয়াত করেন মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ।