২৫ অগাস্ট, ২০২৪ ১৭:৫০ পি এম
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি মোশাররফ হোসেন খান। গত ২৪ আগস্ট ছিল কবির ৬৭তম জন্মদিন। এদিন (শনিবার) কবির বাসায় শুভেচ্ছা জানাতে যান দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ও সাহিত্য সম্পাদক ইয়াসিন মাহমুদ।
কবি মোশাররফ হোসেন খান জন্মদিনের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন- আলহামদুলিল্লাহ। মহান আল্লাহর শুকরিয়া। এদেশের মানুষ একটি সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা আবারও স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বিশেষ করে এদেশের ছাত্র-জনতার এই আত্মত্যাগ ইতিহাস হয়ে থাকবে। দেশবাসির প্রতি আমার অনুরোধ- এই স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে সবাই মিলে কাজ করে যাবো। জীবনের বাকি দিনগুলোতেও সত্য-সুন্দরের পতাকাবাহীর ভূমিকা রাখতে পারি সেই তাওফিক কামনা করছি।
কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, জীবনমুখী গদ্যসাহিত্যসহ শিশু-কিশোরদের সাহসী স্বপ্নবোনার নানা অনুষঙ্গে নিরলসভাবে লেখালেখি করছেন এই কীর্তিমান কিংবদন্তী কবি। ১৯৫৭ সালের ২৪ আগস্ট যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ডা. এম এ ওয়াজেদ খান এবং বেগম কুলসুম ওয়াজেদ তাঁর গর্বিত পিতা-মাতা।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘হৃদয় দিয়ে আগুন’ কাব্যগ্রন্থটি কবি খানকে কবিতার মাঠে দাঁড় করিয়ে দেয় সাহসের সাথে। এরপর ‘নেচে ওঠা সমুদ্র’, ‘আরাধ্য অরণ্য’, ‘বিরল বাতাসের টানে’ কাব্যগ্রন্থগুলো তাঁকে ঝড়ের মাঝে শক্ত মাঝির ভূমিকায় পরিচিত করে। তবে ১৯৯৫ সালে কবিতার মাঠে হৈচৈ ফেলে দেয় তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘পাথরে পারদ জ¦লে’। ‘ক্রীতদাসের চোখ’, ‘নতুনের কবিতা’, ‘বৃষ্টি ছুঁয়েছে মনের মৃত্তিকা’, ‘দাহন বেলায়, ‘কবিতাসমগ্র-১’, ‘কবিতাসমগ্র-২’, ‘সবুজ পৃথিবীর কম্পন’, ‘পিতার পাঠশালা’, ‘স্বপ্নের সানুদেশ’, ‘কুহক ও কুহকী’ ‘বুকের ভেতর দহন দুপুর’, ‘শিখর শিলালিপি’ তাঁকে কাব্যভুবনে শক্তিশালী অবস্থানে অধিষ্ঠিত করে। গদ্য সাহিত্যের ক্ষেত্রে তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে তাঁর ‘সাহসী মানুষের গল্প’।
‘রহস্যের চাদর’, ‘অবাক সেনাপতি’, ‘দূর সাগরের ডাক’, ‘কিশোর কমান্ডার’, ‘ছড়ির তরবারি’, ‘কিশোর গল্প সমগ্র; ‘জীবন জাগার গল্প’, ‘সুবাসিত শীতল হাওয়া’, ‘আগুন নদীতে সাঁতার’, ‘অবাক করা আলোর পরশ’, ‘ছোটদের বিশ^নবী’সহ নানা জীবনীগ্রন্থ তাঁকে শিশু-কিশোর সাহিত্যে করে তুলেছে খ্যাতিমান। গল্পগ্রন্থ ‘প্রচ্ছন্ন মানবী’, ‘সময় ও সাম্পান’, ‘ডুবসাঁতার’, ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ এবং কিশোর উপন্যাস- ‘বিপ্লবের ঘোড়া’, ‘সাগর ভাঙার দিন’, ‘ঝিমায় যখন ঝিকরগাছা’, ‘বাঁকড়া বিলের বালিহাঁস’ ‘কিশোর উপন্যাস সমগ্র-১’ প্রভৃতি গ্রন্থ মোশাররফ হোসেন খানকে কথাসাহিত্যেও এনে দিয়েছে বিশেষ জনপ্রিয়তা।
ইতোমধ্যে ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফারসি, হিন্দি, গুজরাটি, অহমিয়া, রুশ ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে তাঁর কবিতা-গল্প প্রকাশিত হচ্ছে। এই নন্দিত কবি এপর্যন্ত অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।