১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১১:০৯ এএম
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশন মোহাম্মদ আব্দুর রউফ (৯২) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর মগবাজারে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফের বাবা এবং বারাকাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে রয়েছে। মোহাম্মদ আব্দুর রউফ দীর্ঘ দিন যাবৎ হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি ও বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে যৌথ এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও সেক্রেটারি ড. মনোয়ারুল ইসলাম।
শোকবার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন- বিচারপতি আব্দুর রউফ পেশার বাইরেও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ফুলকুঁড়ি আসর’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
আজ সোমবার জোহরের নামাজের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে সোমবার ময়মনসিংহের সদর থানার দাপুনিয়া হাইস্কুল মাঠে মাগরিবের নামাজের পর তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের পাশে দাফন করা হবে।
তিনি ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের পঞ্চম প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবেও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ ১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাইমারি ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি পেয়ে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ১৯৫১ সালে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন, আনন্দ মোহন কলেজ থেকে আইএসসি ও বিএসসি ডিগ্রি, সরকারি বৃত্তি নিয়ে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ও এমএ, ইন এডুকেশন ডিগ্রি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
আবদুর রউফ ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাসে তদানীন্তন ঢাকা হাইকোর্টে আইন-ব্যবসায় নিয়োজিত হন। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। ১৯৮২ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত হন। হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি পদে থাকাকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ তাকে ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন, তিনি বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের স্থলে স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদ ত্যাগ করেন ও বিচারপতি এ কে এম সাদেক তার স্থলে স্থলাভিষিক্ত হন। পরে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে কাজ শুরু করেন ও জুন ১৯৯৫ সালে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।